শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে গত রবিবার রাতে একটি নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে, যা ছাত্রশিবিরকে বদনাম করার জন্য সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ৪৩৬ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের মধ্যে দাবি করা হয়েছে যে, ছাত্রদলের এক কর্মী একটি শিবিরের সদস্যদের বিরুদ্ধে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। এটি এক নেতার নির্দেশে করা হয়েছে বলেও জানা গেছে, যিনি ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী। এই ঘটনাটি ছাত্রশিবিরকে খারাপভাবে উপস্থাপন করার উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে বলে ওই ছাত্রদল কর্মী নিজেই পরে স্বীকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী শেখ ফাকাব্বির সিন, যিনি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুরমা আবাসিক এলাকায় একটি মেসে থাকেন। তিনি ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা নাঈম সরকারের সমর্থক বলে পরিচিত।
ঘটনাটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও প্রভোস্ট সূত্রে জানা যায়, রাত ১০টার দিকে ফাকাব্বির সিন ওই কক্ষে প্রবেশ করেন। কিছু কথাবার্তার পর তিনি চাকু দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারার চেষ্টা করেন। এরপর ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা তাকে আটকিয়ে রাখেন।
রাত সাড়ে ১০টায় ফাকাব্বির ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন, যেখানে দাবি করেন, “শিবিরের সদস্যরা আমাকে কুপিয়ে জখম করে রুমে আটকিয়ে রেখেছে।” কিন্তু কিছু সময় পরে, রাত ২টা ৭ মিনিটে আরেকটি পোস্ট দিয়ে তিনি দাবি করেন, “আমি যে শিবিরকে নিয়ে পোস্ট করেছি তা মিথ্যা। শিবিরের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং আমাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। আমি এটা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে করেছি, যাতে ছাত্রশিবিরকে খারাপভাবে উপস্থাপন করা যায়।”
এদিকে, ওই কক্ষে থাকা আমিরুল ইসলাম, আশিকুজ্জামান রাসেল এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানায়, ফাকাব্বির তাদের কাছে মাদক সেবনের ভিডিও মুছে ফেলার জন্য মেসে এসেছিল এবং ঘটনার পর নিজেকে রক্ষায় তাদের গায়ে চাকু ধরে।
এ বিষয়ে শাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তারেক মনোয়ার বলেছেন, “আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী ওই কক্ষে ছিল না। ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্তের মাধ্যমে পরিষ্কার করা উচিত।”
ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী নেতা নাঈম সরকার জানান, ফাকাব্বির তার পরিচিত একজন এবং ফোনে কথা বলার সময় তাকে ফেসবুকে পোস্ট করতে বলা হয়, কিন্তু তিনি শিবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো পরিকল্পনা করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেছেন, ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।