মোঃ জাহেদুল ইসলাম রতন
লালমনিরহাটে তিস্তা নদী রক্ষন আন্দোলনে বিশাল পদযাত্রা
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে লালমনিরহাটে”জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই” শীর্ষক পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার(১০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে লালমনিরহাট জেলা শহরের রেলওয়ে স্টেশন এলাকা হতে শুরু হওয়া এ পদযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের মিশনমোড়ে এসে শেষ হয়।
“জাগো বাহে তিস্তা বাচাই”আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আসাদুল হাবিব দুলুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ পদযাত্রায় লালমনিরহাট জেলা বিএনপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সর্বস্তরের প্রায় ১০ হাজার সাধারণ মানুষ অংশ নেয়।
পদযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন,রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী তিস্তা নদী এ অঞ্চলের মানুষের এক সময়ে গোলা ভরা ধান ছিল,ছিল গোয়াল ভরা গরু। মুখে মুখে ছিল ভাওয়াইয়া গান। তিস্তাপাড়ের মানুষজন এক সময়ে আনন্দে দিন কাটাতো। তিস্তা নদী ছিল আমাদের মায়ের মতো,সেই তিস্তা এখন শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
তিস্তা নদী এখন ধুধু বালু চর। তিনি আরো বলেন,আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকে রাখে,আর বর্ষা মৌসুমে বিনা কারণে পানি ছেড়ে দেয়।
এর ফলে,বন্যার সৃষ্টি হয়ে লক্ষ লক্ষ পরিবারের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যায়। ঘর-বাড়ি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে মানুষ নিঃস্ব হয়ে বাড়ি-ঘর ছাড়া হচ্ছে।
তিস্তা এখন আমাদের দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।যে তিস্তা একসময় ছিল মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র ভরসা ছিল।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে বিগত সরকার তিস্তাপাড়ের মানুষের সাথে শুধু প্রতারণাই করেনি পরিহাসও করেছে। তিনি আরও বলেন,আমরা মাঝে মাঝেই শুনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই হয়নি।
আমরা এটাও জানি আমাদের বন্ধু পার্শ্ববর্তী দেশ চীন এখানে অর্থায়ন করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। একটি স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
কিন্তু, কি কারণে সেটি আলোর মুখ দেখতে পাইনি জানি না।
তিস্তার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তাদের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আর জীবন-জীবিকা ফিরে পাবে এই অঞ্চলের মানুষের কর্মচাঞ্চল্যতা তৈরি হবে।কিন্তু,তার কিছুই হয়নি। বর্তমানে, তিস্তার দিকে তাকালে আমাদের সকলের বুক হাহাকার করে উঠে। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।তাই,আমরা এই তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে নদীর ন্যায্য পানি বন্টন, স্থায়ীবাদ নির্মাণের লক্ষ্যে আমরা এই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আর এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে তিস্তা তীরবর্তী ৫টি জেলার মানুষ।
পদযাত্রা ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারী ৪৮ ঘন্টাব্যাপী লাগাতার কর্মসূচি হিসেবে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট,রংপুর এবং গাইবান্ধায় জেলাসহ ১১টি স্থানে একই সময়ে অবস্থান কর্মসূচী পালনের ঘোষনা হয়।