মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খোকন প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন বাঙালির ইতিহাসের এক অমলিন অধ্যায়।পর্যায়ক্রমিক আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে ১৯৫২ সালে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। দেশের এই ভাষা আন্দোলনে সালাম,বরকত,রফিকসহ প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে যা ইতিহাসের পাতায় সমুজ্জ্বল। ভাষা একটি আল্লাহর নিয়ামত।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন,
اَلرَّحۡمٰنُۙ ١ عَلَّمَ الۡقُرۡاٰنَؕ ٢ خَلَقَ الۡاِنۡسَانَۙ ٣ عَلَّمَهُ الۡبَيَانَ ٤
অর্থ :১/ পরম দয়ালু (আল্লাহ),২/ তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন,৩/ তিনিই মানুষ সৃষ্টি করেছেন,৪/ তিনিই শিখিয়েছেন মনের কথা প্রকাশ করতে,।(সূরা- রহমান,১-৪)
মাতৃভাষাকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র,.
فَاِنَّمَا یَسَّرۡنٰهُ بِلِسَانِكَ لَعَلَّهُمۡ یَتَذَكَّرُوۡنَ ﴿۵۸}.
অর্থ : অতঃপর আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
মহান আল্লাহ যে আদম (আ:) কে যাবতীয় বিষয় শিখিয়েছেন, এর মধ্যে ভাষা ছিল অন্যতম।কারণ তিনি ফেরেশতাদের সামনে মহান আল্লাহ নির্দেশে সবকিছুর নাম উল্লেখ করেন এ কথা আল- কুরআনে সূরা বাকারায় সুস্পষ্ট ভাবে করা হয়েছে,
وَ عَلَّمَ اٰدَمَ الۡاَسۡمَآءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمۡ عَلَی الۡمَلٰٓئِكَۃِ ۙ فَقَالَ اَنۡۢبِـُٔوۡنِیۡ بِاَسۡمَآءِ هٰۤؤُلَآءِ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۳۱﴾
অর্থ: আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। সুতরাং বললেন, ‘তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
মাতৃভাষা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন–
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا بِلِسَانِ قَوۡمِهٖ لِیُبَیِّنَ لَهُمۡ ؕ فَیُضِلُّ اللّٰهُ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَهۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَكِیۡمُ ﴿۴﴾
অর্থ: আর আমি প্রত্যেক রাসূলকে তার কওমের ভাষাতেই পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বর্ণনা দেয়, সুতরাং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখান। আর তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) আরব দেশে জম্ম গ্রহণ করেন।আরব দেশের মাতৃভাষা আরবি আল্লাহর পেয়ারা হাবিব হযরত মুহাম্মদ (স:) এর উপর পবিত্র কুরআন আরবি ভাষায় নাযিল হয়েছে।
সুতরাং উপরোক্ত আয়াতের সরল ব্যাখ্যা দাড়ায় হে রাসূল (স:) নিশ্চয়ই আমিই এ পবিত্র কুরআন শুধু এ উদ্দেশ্যেই আপনার ভাষায় (মাতৃভাষায়) সহজ করে দিয়েছে, যাতে আরবের অধিবাসীরা এর বিস্তারিত বিষয় আদেশ নিষেধ ও ভবিষ্যদ্বাণী গুলো সহজে বুঝতে পারে।এখানে তিনটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য :১/ মাতৃভাষাকে অপরিসীম গুরুত্ব ও মর্যাদা প্রদান। ২/ মাতৃভাষার মাধ্যমে জনগণকে শিক্ষাদান। ৩/ মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স:) কে বিশ্ববাসীর জন্য রহমাতুল্লিল আলামীন হিসেবে আরবি ভাষা- ভাষি লোকজনের মধ্যে প্রেরণ।