মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা ব্যুরো :
রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সুপ্রীমকোর্ট ও সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট ও United Nations Development Programme ( UNDP) Bangladesh এর যৌথ উদ্যোগে আজ শনিবার ১২ এপ্রিল সকালে খুলনার হোটেল সিটি ইন- এর কনফারেন্স কক্ষে ” Judicial Independence and Efficiency in Bangladesh ” শীর্ষক একটি রিজিওনাল সেমিনারে একথা বলেন তিনি। বিচার বিভাগের সাধীনতা নিশ্চিতকরন সহ বিচার সেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করনীয় সম্পর্কে আয়োজিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মাদ আলী। সেমিনার শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রদান করেন, UNDP, Bangladesh এর Resident Representative, স্টিফেন লিলার ( Stefan Liller)। এছাড়া বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাস্ট্রদুত মাইকেল মিলার ( H E Michael Miller) ও সুইডেনের রাস্ট্রদুত নিকোলাস উইকস ( H E Nicolus Weeks) উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন। উক্ত সেমিনারে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, শ্রম আদালতে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাসহ খুলনার বিভিন্ন ট্রাইব্যুনালের বিচারকবৃন্দ এবং সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেমিনারে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌশুলী, পাবলিক প্রসিকিউটর সহ অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের পরামর্শক্রমে আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রশিক্ষণ শাখা হতে বিচার ২৫-০৩-২০২৫ খ্রি: তারিখে এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ জারি করা হয়। সেমিনারে সাগত বক্তব্যে UNDP, Bangladesh এর Residential Representative, Mr, Stefan Liller দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক সতন্ত্রীকরনে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ মর্মে মন্তব্য করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহুর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনঃর্ব্যক্ত করেন। প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরনে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ এর বিভিন্ন অনুষদের সফল বাস্তবায়নে অন্তবর্তীকালীন সরকারের আন্তরিক সহযোগীতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সক্রিয়তার কারনেই দ্রুততম সময়ে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য অধ্যাদেশ প্রনয়ণ সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, রোডম্যাপ কর্মসুচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ও অন্তবর্তীকালীন সরকার নিবিড়ভাবে কাজ করছে। বিশেষ করে তিনি মন্তব্য করেন যে সুপ্রীম কোর্ট কতৃক বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় তৈরির বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ প্রস্তুতের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এজন্য তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি মন্তব্য করেন যে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সহযোগিতায় দেশের আদালত সমুহে বিরাজমান মামলার জট নিরসনে বিভিন্ন স্তরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিচারকদের পদ তৈরি হয়েছে। যা অদুর ভবিষ্যতে মামলা জট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। এছাড়া বিশেষায়িত বানিজ্যক আদালত তৈরির জন্য প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে মর্মে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন,যে, কক্সবাজারে সুপ্রীম কোর্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট দ্রত চালু করার বিষয়ে দুটো বিশেষ কমিটি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি মন্তব্য করেন যে, দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত সেমিনার সমুহ হতে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে এবং উক্ত মতামত সমুহ অন্তর্ভুক্ত করে অচিরেই বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট দেশের বিচার বিভাগের সার্বিক আধুনিকায়নে একটি স্টাটেজিক প্লান ( Strategic plan) তৈরির কাজ শুরু করবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, উক্ত স্টাটেজিক প্লানের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লোত্তর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ যে নতুন যাত্রা শুরু করেছে তা পুর্নতা পাবে এবং জনগন বিচার বিভাগের উপর হারানো আস্থা ফিরে পাবে।