মো:অলিউর রহমান তানভীর স্টাফ রিপোর্টার 

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক মেয়র, ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালক মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, “ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে আর দেশের মানুষ পেয়েছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে এই বিজয় কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে দেওয়া যাবে না। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আছে। তারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করবে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে বিএনপি বা অঙ্গসংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ কোনো অন্যায় কাজে যুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অত্যন্ত কঠোর। ইতিমধ্যে তার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। সুতরাং সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি।”

তিনি বলেন, “ অনেক হাইব্রিড এবং অনুপ্রবেশকারী দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এসব ব্যাপারে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। কেউ যদি কোথাও দলের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করে, তাকে ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।”

শুক্রবার (২৫এপ্রিল) দুপুরে চীন থেকে ভার্চুয়ালী এক আলাপতারিতায় মৌলভীবাজার-৪ ( শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ ) নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের খোঁজ খরব নেন এবং তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান।

মহসিন মিয়া মধু রাজনীতি কর্মজীবনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আওয়ামীলীগ নেতারা বর্তমান শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নূরে আলম সিদ্দিকীর কলেজ রোডস্থ সুরমা সিগারেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে বলে ছিলো যে, চাঁদা না দিলে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। বিষয়টি সেইদিন আমার নজরে আসলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করেছি এবং তারা জনসম্মুখে ক্ষমাও চেয়েছে। আমি শ্রীমঙ্গল শহরকে চাঁদাবাজ মুক্ত করেছি বিধায় আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এসব কেউ কান না দেওয়ার অনুরোধ। ”

তিনি বলেন, “ গত ৫ আগস্টের পর পর শ্রীমঙ্গল শহরতলীর রাধানগর এলাকায় পাঁচ তারকা হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান টি রির্সোটে নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমান অবস্থান করেছেন এমন খবরে কিছু ‘উচ্ছৃঙ্খল’ ব্যক্তিরা হামলা করার পরিকল্পনা নিয়ে রিসোর্টের সামনে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাকে খবর দেয়। সেসময় আমি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আইনশঙ্খলা মিটিংয়ে ছিলাম। আমি দ্রুত মিটিং থেকে বের হয়ে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতিহত করেছি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্র্যান্ড সুলতানের ভেতরে গিয়েও অনেক খোঁজাখুঁজি করে শামীম ওসমানের কোনো সন্ধান পায়নি।”

মহসিন মিয়া মধু বলেন, “আমার একটাই বার্তা যেখানেই কোন অন্যায়, অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড হবে আপনারা আমাকে অবগত করবেন। আমি অতীতে যেভাবে কাজ করেছি এখনো সর্বদা আপনাদের পাশে থেকে আপনাদের হয়ে কাজ করে যাবো- ইনশাআল্লাহ।”

শ্রীমঙ্গল শহরের সচেতন নাগরিক সমাজ জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি দখল, দোকান ও মার্কেটে চাঁদাবাজি এবং প্রতিপক্ষের ওপর হামলাসহ নানা অভিযোগ থাকলেও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ দুইটি উপজেলায় অধিকাংশই চা জনগোষ্ঠীর বসবাস। এসব এলাকার মানুষ মহসিন মিয়াকে পছন্দ করে।

তাঁরা আরো বলেন, শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে না থাকায় পরিস্থিতি এমন অবস্থানে গেছে যে, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে ছিল। সেখানে একমাত্র মহসিন মিয়া মধুর প্রচেষ্ঠায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মন্দির,গীর্জা ও ধর্মীয় উপসানালয়, প্রাইভেট হাসপাতাল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকারখানা রক্ষায় তার ভূমিকা অপরিসীম। যার জন্য শ্রীমঙ্গল পৌরবাসী বার বার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করে থাকেন।