মোঃ মাসুম বিল্লাহ
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় গতকাল (২৬ এপ্রিল ২০২৫) রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আঘাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে শুরু হওয়া এই দুর্যোগে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ। প্রবল গতির বাতাসের সঙ্গে বড় বড় শিলাবৃষ্টি ঘরবাড়ি, ফসলের মাঠ ও ফলের বাগানগুলোকে তছনছ করে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, ঝড়ের কারণে বহু কাঁচা ও টিনের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে। অনেক গাছপালা উপড়ে পড়ে রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ লাইনে ব্যাপক ক্ষতির ফলে অনেক এলাকা এখনও অন্ধকারে রয়েছে। বিশেষ করে কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে, কারণ মাঠের পাকা ধান, শাকসবজি এবং আম-লিচুর মতো মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির আঘাতে অনেক আম ও লিচুর গুটি ঝরে গেছে, যা কৃষকদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, এবারের ফলন ভালো হয়েছিল বলে তাঁরা আশায় ছিলেন, কিন্তু এই আকস্মিক দুর্যোগে তাঁদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এক কৃষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার পাকা ধান সব মাটিতে পড়ে গেছে, লিচু গাছের অর্ধেক ফল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কীভাবে সংসার চলবে বুঝতে পারছি না।”
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে জরিপ কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও সাধারণ মানুষের সহায়তায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
এদিকে, দুর্যোগের পর দিন সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা লাইন মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। তবে কিছু এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।